স্ত্রী মিলন

প্রশ্নঃ সংগম শুরু করার পূর্বে সর্বপ্রথম কি করতে হবে?
উত্তরঃ সংগম শুরু করার পূর্বে সর্ব প্রথম নিয়ত সহীহ করে নেয়া; অর্থাৎ, এই নিয়ত করা যে, এই হালাল পন্থায় যৌন চাহিদা পূর্ণ করার দ্বারা হারামে পতিত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে, তৃপ্তি লাভ হবে এবং তার দ্বারা কষ্ট সহিষ্ণু হওয়া যাবে, ছওয়াব হাছেল হবে এবং সন্তান লাভ হবে। (দেখুনঃ আহকামে জিন্দেগী)
প্রশ্নঃ সংগমের শুরুতে কোন দোয়া পড়তে হবে?
উত্তরঃ সংগমের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলে কার্য শুরু করা। তারপর শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া। উভয়টিকে একত্রে এভাবে বলা যায়-
بِسْمِ اللهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ و جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا.
উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতানা ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাযাকতানা।
অর্থঃ আমি আল্লাহর নাম নিয়ে এই কাজ আরম্ভ করছি। হে আল্লাহ, শয়তানকে আমাদের থেকে দূরে রাখ এবং যে সন্তান তুমি আমাদের দান করবে তার থেকেও শয়তানকে দূরে রাখ।
(দেখুনঃ আহকামে জিন্দেগী)
প্রশ্নঃ বীর্যপাতের সময় কোন দোয়া পড়বে?
উত্তরঃ বীর্যপাতের সময় নিম্নোক্ত দুআটি পড়বেঃ
اللّهُمَّ لآ تَجْعَلْ لِلشَّيْطَانِ فِيْمَا رَزَقْتَنِيْ نَصِيْبًا.
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা লা তাজআল লিশ্শাইতানি ফিমা রাযাকতানী নাসীবান।
অর্থঃ হে আল্লাহ, যে সন্তান তুমি আমাদেরকে দান করবে তার মধ্যে শয়তানের কোন অংশ রেখ না।
(দেখুনঃ আহকামে জিন্দেগী)
প্রশ্নঃ কোন কোন অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সংগম করা যাবে না?
উত্তরঃ নিম্নোক্ত অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সংগম করা যাবে না। স্ত্রীর মাসিক বা প্রসবকালীন স্রাব চলা কালে। এতেকাফ অবস্থায়। রোজার দিনের বেলায়। এহরাম অবস্থায়। স্ত্রীর পিছনের রাস্তা দ্বারা। (দেখুনঃ স্বামী-স্ত্রীর মধুর মিলন)
প্রশ্নঃ সংগম অবস্থায় স্ত্রীর যোনীর দিকে নজর দেয়া যাবে কি না?
উত্তরঃ সংগম অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে নজর না দেয়া। তবে হযরত ইবনে ওমর (রা.) সংগম, অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে দৃষ্টি দয়া উত্তেজনা বৃদ্ধির সহায়ক বিধায় এটাকে উত্তম বলতেন। (শরহুন নুকায়া ও হিদায়া)
প্রশ্নঃ সংগম অবস্থায় স্ত্রীর যোনী স্বামী চোশতে পারবে কি না? এবং স্বামীর লিঙ্গ স্ত্রী চোষতে পারবে কি না?
উত্তরঃ সংগম অবস্থায় স্বামী স্ত্রী একে অপরের লজ্জাস্থানকে চোষা এবং মুখে নেওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ, এবং মাকরুহ ও গুনাহের কাজ। এটা কুকুর, গরু, বকরী ইত্যাদি প্রানীর স্বভাবের মত। তাই এ কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
চিন্তা করে দেখুন যে মুখে পবিত্র কালিীমা পড়া হল, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা হয়, দরুদ শরীফ পড়া হয়, তাকে এমন নিকৃষ্ট কজে ব্যবহার করতে মন কিভাবে চায়। তাই এ কাজ মুমিনের কাজ হতে পারে না।
(দেখুনঃ ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ও ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়া)
প্রশ্নঃ দাঁড়িয়ে সহবাস করা যাবে কি না?
উত্তরঃ হ্যাঁ, দাঁড়িয়েও সহবাস করা যাবে। যারা বলে দাঁড়িয়ে সহবাস করা যায় না তাদের কথা ঠিক নয়। তাই ঐ কথায় কান দেয়া যাবে না। (দেখুনঃ ইতহাফুস সাদাতিল মাত্তাকীন, আল কাউসার)
প্রশ্নঃ সংগমের বিশেষ কিছু আদব ও বিধি-নিষেধ জানতে চাই?
উত্তরঃ সংগমের কিছু আদব ও নিয়ম নি¤œরূপঃ কোন শিশু বা পশুর সামনে সংগমে রত না হওয়া, পর্দা ঘেরা স্থানে সংগম করা, সংগম শুরু করার পূর্বে শৃঙ্গার (চুম্বন, স্তন মর্দন ইত্যাদি) করবে। বীর্য, যৌনাঙ্গের রস ইত্যাদি মোছার জন্য এক টুকরা কাপড় রাখা, সংগম অবস্থায় বেশী কথা না বলা, বীর্যের ও স্ত্রীর যৌনাঙ্গের প্রতি দৃষ্টি না করা, সংগম শেষে পেশাব করে নেয়া, এক সংগমের পর পুনর্বার সংগমে লিপ্ত হতে চাইলে যৌনাঙ্গ এবং হাত ধুয়ে নিতে হবে, বীর্যপাতের পরই স্বামীর নেমে না যাওয়া বরং স্ত্রীর উপর অপেক্ষা করা, যেন স্ত্রীও তার খাহেশ পূর্ণ মাত্রায় মিটিয়ে নিতে পারে, সংগমের পর অন্ততঃ বিছুক্ষণ ঘুমানো উত্তম, জুমুআর দিনে সংগম করা মুস্তাহাব, সংগমের বিষয় কারও নিকট প্রকাশ করা নেষেধ, এটা একদিকে নির্লজ্জতা, অন্যদিকে স্বামী/স্ত্রীর হক নষ্ট করা, সংগম অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে নজর না দেয়া, তবে হযরত ইবনে ওমর (রা.) সংগম, অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে দৃষ্টি দয়া উত্তেজনা বৃদ্ধির সহায়ক বিধায় এটাকে উত্তম বলতেন। (দেখুনঃ আহকামে জিন্দেগী)