স্ত্রীকে মায়ের সাদৃশ বলায় হযরত খাওলা রাদি. বিবাহ বিচ্ছেদ ও নবীর সাথে বাদানুবাদ

হযরত আউস ইবনে সামেত একদিন তাঁর স্ত্রী হযরত খাওলা বিনতে ছা‘লাবাকে নামাজরত অবস্থায় দেখলেন। তিনি সুন্দরী ছিলেন, আর আউস স্ত্রীর প্রতি আসক্ত ছিলেন। যখন সে নামাজের সালাম ফিরাল তখন স্বামী তাকে কামনা করলেন। স্ত্রী তার ডাকে সাড়া না দিলে তিনি রাগন্বিত হলেন এবং তার সাথে যিহার করলেন, [অর্থাৎ- বললেন তুই আমার কাছে আমার মায়ের মত। তখন সে [স্ত্রী] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আসল এবং বলল, আউস আমাকে যখন বিবাহ করেছিল তখন আমি যুবতী ও কামনীয় ছিলাম, যখন আমার বয়স বাড়ল সন্তানাদির সংখ্যা বাড়ল তখন সে আমাকে তার মায়ের মতো বলল। আমার কিছু ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে, সে বাচ্চাদেরকে তার সাথে সম্পৃক্ত করলে অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে, আর আমার সাথে দিলে অভুক্ত থাকবে। এক বর্ণনায় আছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, তোমার ব্যাপারে আমার কাছে ফয়সালা দেওয়ার মতো কিছু নেই। অন্য আর এক বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছেন, তুমি তার জন্য হারাম হয়ে গেছে। এ কথা শুনে সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে তো আমাকে তালাক দেয়নি, সে আমার সন্তানদের পিতা এবং আমর সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কললেন, তুমি তার জন্য হারাম হয়ে গেছ। তখন সে বলল, আমি আল্লাহর কাছে আমর ক্ষুধা ও দুঃখের অভিযোগ করছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যতই তাকে বলছিলেন যে, তুমি তার জন্য হারাম হয়ে গেছ, ততই সে ক্রন্দন করছিল আর আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছিল। যখন সে এ রকম অবস্থায় ছিল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মুখমন্ডল পরিতর্বন হয়ে গেল এবং কুরআনের এ আয়াতগুলো আবর্তীণ হলো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার স্বামী কে ডেকে পাঠালেন। এবং তাকে বললেন, তুমি কি গোলাম আযাদ করতে পারবে? সে উত্তরে বলল, না, আল্লাহর কাসম! তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাহলে রোজা রাখতে পারবে কি? সে উত্তরে দিল, না, আল্লাহর কসম। আামি দৈনিক একবার দু’বার খেতে না পারলে আমার দৃষ্টিশক্তি লোপ পায় এবং মনে হতে থাকে যে আমার মৃত্যু আসবে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, তাহলে ষাটজন মিসকিনকে খাবার দান করতে পারবে কি? সে উত্তরে দিল, না, আল্লাহর কসম ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তবে আপনি আপনি আমাকে সদকা দিয়ে সাহয্য করলে পারবো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে পনের সা’ খাদ্য দান করলেন এবং আউস নিজের পক্ষ থেকে সমপরিমাণ দিয়ে ষাটজন মিসকিনকে খাবার দান করলেন।

This entry was posted in কোরআনের গল্প. Bookmark the permalink.
//