প্রশ্নঃ নির্ধারিত সময়ের পূর্বে গর্ভপাত হলে তারপর নির্গত রক্ত নেফাস (প্রসব কালীন) ¯্রাবের হুকুমে হবে কি না?
উত্তরঃ যদি কারো গর্ভপাত হয় এবং পতিত সন্তানের দু’একটি অঙ্গ পূর্ণ হয়ে থাকে, তাহলে এরপর প্রবাহিত রক্তটাও নিফাস। আর যদি তার মধ্যে মানুষের কোন অঙ্গের বিকাশ না ঘটে বরং একটি গোশতের টুকরামাত্র, তাহলে এরপর পতিত রক্ত নিফাস নয়। সম্ভব হলে হায়েয হবে নইলে ইস্তিহাযা। যেমন- যদি তিন দিনের কম সময়ে রক্ত বন্ধ হয়ে যায় অথবা পবিত্রতার পনের দিন না যেতেই এই রক্ত এসে যায়, তাহলে হায়েয হতে পারে না, তাই তা ইস্তিহাযা হবে। [তথ্যসূত্র– আদ্দুরুল মুখতার, বেহেশতীযেওর]
প্রশ্নঃ আজকাল অনেক মহিলার সিজারের মাধ্যমে সন্তান হয়। সন্তান পরবর্তী যে ¯্রাব দেখা যায় তা কি নেফাসের রক্ত হিসেবে গণ্য হবে?
উত্তরঃ সন্তান স্বাভাবিক নিয়মে ভূমিষ্ট হোক বা সিজার করে হোক এরপর মহিলার যে রক্ত¯্রাব আসে তা নেফাস বলেই গণ্য হবে। [তথ্যসূত্র– আলবাহরুর রায়েক, ফাতাওয়া হিন্দিয়া, আদ্দুরুল মুখতার]
প্রশ্নঃ কখনো কখনো সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর ৪০ দিনের বেশি সময় রক্ত আসে। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দিনগুলোর হুকুম কি হবে। তাতে নামায রোজা করা যাবে কি না?
উত্তরঃ সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর যদি রক্ত চল্লিশ দিনের বেশি প্রবাহিত হয়। তাহলে যদি এটা তার জীবনের প্রথম প্রসব হয় তবে চল্লিশ দিন নিফাস আর অবশিষ্ট দিন ইস্তিহাযা গণ্য হবে। চল্লিশ দিন শেষ হতেই গোসল করে নামায পড়া শুরু করবে, রক্ত বন্ধের অপেক্ষা করবে না। আর যদি এটা তার প্রথম বাচ্চা না হয় তাহলে নিশ্চয় তার পূর্ব প্রসবের একটি অভ্যাস আছে। এখন সেই অভ্যাসের দিনগুলোকে নিফাস ধরে অবশিষ্ট দিনগুলোকে ইস্তিহাযা মনে করবে। [তথ্যসূত্র– আল বাহরুর রায়েক]
প্রশ্নঃ কোন মহিলার যদি প্রথম বাচ্চার সময় নেফাসের যে অভ্যাস ছিল যদি পরবর্তীতে সে অভ্যাসের চেয়ে বেশি দিন রক্ত আসে তাহলে কি করবে। যেমন- কারো ৩০ দিন রক্ত আসার অভ্যাস ছিল কিন্তু একবার ৩০ দিন অতিক্রম হয়ে যায় তাহলে তার হুকুম কি হবে?
উত্তরঃ কোন মহিলার হয়তো ৩০ দিন রক্ত যাওয়ার অভ্যাস ছিল, কিন্তু একবার ৩০ দিন অতিক্রম হওয়ার পরও রক্ত বন্ধ হল না; এমতাবস্থায় এই মেয়েলোক এখন গোসল না করে অপেক্ষা করবে। অতঃপর যদি পূর্ণ ৪০ দিন শেষে বা ৪০ দিনের ভিতর রক্ত বন্ধ হয় তাহলে এই সব কয় দিনই নেফাসের মধ্যে গণ্য হবে। পক্ষান্তরে যদি ৪০ দিনের বেশী রক্ত জারী থাকে, তাহলে পূর্বের অভ্যাস মোতাবেক ৩০ দিন নেফাসের মধ্যে গণ্য হবে এবং অবশিষ্ট দিনগুলো ইস্তেহাযা বলে গণ্য হবে। ৪০ দিন পর গোসল করে নামায পড়তে থাকবে এবং ৩০ দিনের পরের ১০ দিনের নামাযের কাযা করবে। [তথ্যসূত্র– আল বাহরুর রায়েক, ফাতহুল কাদীর]
প্রশ্নঃ নেফাস অবস্থায় নখ পালিশ বা এ জাতীয় বস্তু লাগানো জায়িয কি না?
উত্তরঃ নিফাস অবস্থায় যেহেতু উযু ও নামাযের প্রয়োজন পড়ে না তাই ঐ সময় নখ পালিশ লাগানো জায়েয হবে। কিন্তু পাক হওয়ার পর উযু বা গোসল করার সময় তা তুলে ফেলতে হবে। কারণ, সাধারণতঃ আমাদের দেশে প্রচলিত নখ পালিশ ব্যবহারে নখের ভিতরে পানি প্রবেশ করে না বিধায় উযু নামায কোনটাই সহীহ হয় না।
উল্লেখ্য, নখ পালিশ ইত্যাদি ব্যবহার যদিও সাময়িক সৌন্দর্য অর্জিত হয়, কিন্তু এগুলো স্থায়ীভাবে ব্যবহার করা ত্বকের জন্যও ক্ষতিকর। তাই এগুলো ব্যবহার অভ্যস্ত না হওয়া ভাল। [তথ্যসূত্র– ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল]
Categories
- uncatagorized
- ▼ঈমান ও আকাইদ
- ▼ইবাদাত
- ▼লেনদেন বিষয়াদী
- ▼সামাজিক
- ▼আত্মপরিশুদ্ধি
- অন্যান্য
- কোরআনের গল্প
- সুন্নতে নববী
- ▼গুরুত্বপূর্ণ দোয়া
- সাধারণ জ্ঞান