প্রশ্নঃ অহংকারের ক্ষতি কি কি ও তা থেকে মুক্তির উপায় কি?

উত্তরঃ জ্ঞান-বুদ্ধি, ইবাদত-বন্দেগী, মান-সম্মান, ধন-দৌলত ইত্যাদি যে কোন দ্বীনী বা দুনিয়াবী গুণে নিজেকে বড় মনে করা এবং সেই সাথে অন্যকে সে ক্ষেত্রে তুচ্ছ মনে করাকে বলে তাকাব্বুর বা অহংকার। অহংকার গুনাহে কবীরা। কেউ এ রোগে আক্রান্ত হলে সে কারও উপদেশ গ্রহণ করে না, কারও সৎপরামর্শও গ্রহণ করে না। এ রোগ হক ও সত্য গ্রহণের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা। এ হল দ্বীনী ক্ষতি। আর অহংকারীকে মনে প্রাণে সকলে ঘৃণা করে এবং সময় সুযোগে তার থেকে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করে, এভাবে দুনিয়াতেও সে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। এ সব বিছুর প্রেক্ষিতে তাকাব্বুর বা অহংকারকে সর্বরোগের মূল বলা হয় এবং তাকাব্বুর হারাম ও বড় গুনাহ।

এ রোগ থেকে মুক্তির উপায় ঃ

১. নিজের অতীত, বর্তমান ও ভষ্যিত সম্পর্কে চিন্তা-আবনা করা যে, আমি নাপাক পানি থেকে তৈরী এবং বর্তমানেও আমার পেটে নাপাক ভরা, চোখে ভিতরে, মুখে ও নাকের ভিতর ময়লা ভরা। আর মৃত্যুর পর আমার সব কিছু পচে গলে দুর্গন্ধময় হয়ে যাবে। ইত্যাদি।

২. এ কথা চিন্তা করা যে, সমস্ত গুণ মূলতঃ আল্লাহরই একান্ত দান, আমার বুদ্ধি বা বাহু কলে তা অর্জিত হয়নি, নতুবা আমার চেয়ে কত বুদ্ধিমান বা শক্তিশালী ব্যক্তি এ গুণ অর্জন করতে পারেনি। অতএব আল্লাহর অনুগ্রহে যা অর্জিত হয়েছে তার জন্য আমর অহংকার বা বড়ত্বেরোধ করা বোকামী বৈ কি? বরং এর জন্য আল্লাহর সামনে আমকে বিনয়ী হওয়া উচিত।

৩. যাকে ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ মনে হবে, মনে না চাইলেও জোর জবরদস্তী তার সাথে ন¤্র ব্যবহার করতে হবে।

৪. অভাবী ও গরীব শ্রেণীর লোকদের সঙ্গে বেশী উঠা-বসা রাখবে।

৫. মৃত্যুকে বেশি বেশী স্মরণ করবে।

৬. নিজের দোষ-ত্রুটি, নিন্দা-অপবাদ শুনেও প্রতিবাদ না করা।

৭. ক্রোধপ্রকাশ পেলে ক্ষমা চেয়ে নেয়া (ছোটদের থেকে হলেও)।

৮. একান্ত প্রয়োজন ছাড়া নিজের ছোট-খাট কাজ নিজেরই করা। মজদুর বা চাকর-নওকর না লাগানো।

৯. সকলকে আগে সালাম দেয়া।

১০. তাকাব্বুর দুর করার সবচেয়ে উত্তম পন্থা হল তাকাব্বুরের ধরণ ও বিবরণ জানিয়ে হক্কানী পীর ও মাশায়েখে তরীকত থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা জেনে সে অনুযায়ী আমল করা।

 

১.  খাহেশাতে নফমসানীকে/কুপ্রবিত্তিকে দুর্বল করা।

 

(দেখুনঃ বেহেশতী যেওর, আহকামে যিন্দেগী)

This entry was posted in কয়েকটি মনের রোগ ও তা থেকে পরিত্রাণের উপায়. Bookmark the permalink.
//